*অর্ধেক জীবন*
তৃতীয় পর্বের পর
চতুর্থ পর্ব
পুনশ্চঃ ------৭ পাকে ঘুরে, বেনে সুতোর গেঁড়োয়,
আমি সংসার জীবনে আবদ্ধ হলাম।
শুরু হলো আমার বিবাহিত জীবন।
শুরু হলো জীবনের আর এক লড়াই।
বিয়ে করবার পর আমার খুব ভয় হয়েছিল।
বউটা কেমন হবে-----?
আামার মনে হয়, এই ভয় বিয়ের পর প্রায় সব
ছেলেদের মনে এসে থাকে।
তাই এই ভয় নিয়ে একটি বাংলা জনপ্রিয় লোকগীতি আছে ---
" শুধু বউটা যেন ভালো হয় কাকা
ও বিহায় নাই লিবো টাকা গো, নাই লিবো টাকা ----
শুধু , বউটা যেন ভালো হয় কাকা ----
যদিও বিয়ের কয়েক দিন পরেই অমার সেই ভয়
কেটে যায়।
আমার বউ দেখতে
অপ্সরা, উব্বর্সি, মেনকা,
রম্ভা , স্বর্গের নর্তকিদের মতো আহামরি,
অতি সুন্দরী নয়,
নয় বলিউড বা হলিউডের নায়িকাদের মতো এতটাও সুন্দরী ,
নয় কোন ফ্যাশন শোওয়ের রাম্পে হাঁটা ল্যাস্যময়ী, হ্যাস্যময়ীদের মতো সুন্দরী।
আর বিশ্বসুন্দরী তে নয়ই-----
আমার বউ দেখতে কালো,
তবে কয়লা কিংবা আলকাতরা মতো, এতোটা
কালো না হলেও
ফর্সা তো মটেই- নয় ------
তবে গায়ের রঙ ফর্সা না হলেও
আমার বউয়ের মনটা ফর্সা বরাবরই ছিলো, এবং এখনো তা আাছে।
তাই আমার এই কালো বউকে নিয়ে গর্ব করা
চলে বা অনায়াসে গর্ব করা যায়।
অনু, ----- মানে অনুশ্রী, আমার স্ত্রী,
অনু আমার জীবনে বউ হয়ে আসার পর থেকে
আমার জীবনে একটা নতুন ছন্দ এলো, আমার জীবন পেলো একটা নতুন মাএা, জীবনে এলো আমার এক নতুন গতি।
দিন আনা , দিন খাওয়া,আমার মতো
হা -ঘরের এমন এক জনের সাথে
ওর যে বিয়ে হয়েছে, তার জন্য
ওর মনে এটো টুকুও দুঃখ নেই , নেই কোন
অভিমান,
বিধির বিধান, ভ্যাগের লিখন বলেও ওর মনে কোন আাক্ষেপ নেই -----
সংসারের সব অভাব,দুঃখ -- কষ্ট ও সব হাসি মুখে
মেনে নিয়ে আমার সাথে জীবন কাটাতে লাগলো।
এই ভাবেই দুঃখে- কষ্টে জীবন এগিয়ে চলতে
থাকলো তার নিজস্ব নিয়মে -----
এরি মধ্যে আমাদের এজটি কন্যা সন্তান হলো।
তার নাম রাখা হলো সুস্মিতা ------
আমার স্ত্রীর কখা হলো আমরা যতই দুঃখ-কষ্টে খাকি নাই কেন, আমাদের সন্তান যেন সর্বদা। হাসি- খুসি তে থাকে।
সুস্মিতা মানে, যে সবর্দা হাসে-----.বা যে /সর্বদা হাসি - খুসি তে থাকে -------
তাই আমার মেয়ের নাম রাখা হলো সুস্মিতা।
ও , ওর মায়ের মতো কালো নয়, ওর গায়ের রঙ
দুধে-আলতা না হলেও, ফর্সা, ভারি মিষ্টি ওর
মুখ,
আর ওই মিষ্টি মুখের দিকে তাকিয়ে আমরা স্বামী - স্ত্রী দুজনে স্বপ্ন দেখতে লাগলাম।
আগামীর সুন্দর, সোনালী স্বপ্ন--------
আমার মেয়ের বয়স তখন সবে ৬ মাস,
ওর মুখে ভাত,অন্নপ্রাশন্নের তোড়জোড় চলছে।
এমন সময়, প্রবল বন্যা এসে ভাসিয়ে দিলো
আামাদের একমাত্র মাটির ছোট কুঁড়ে ঘরটি।
আমাদের একমাত্র আশ্রয়, মাটির ছোট কুঁড়ে ঘরটি তলিয়ে গেলো বন্যার গভীর জলের তলায়।
আশ্রয়হীন হয়ে, ৬ মাসের শিশুকন্যা কে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাতে থাকলাম।
আমার প্রথম এবং একমাত্র কন্যার মুখে ভাত
/ অন্নপ্রাশন, নৈব-নৈবচ ভাবে সম্পন্ন হলো।
এরপর আমার স্ত্রী ভারি চিন্তায় পড়ে গেল ---
একেতো আমাদের সংসারের এই দূরাবস্থা, তারপর মেয়েকে বড়ো করা, মানুষের মতো মানুষ করা। কিভাবে হবে ---?
এই ভাবনা তাকে দিন- রাত ভাবিয়ে তুলতে লাগলো।
আমার স্ত্রী ঠিক করলো সেও রোজকার করবে ----
আমার বাবার আপত্তি, আমার আপত্তি সত্বেও
ও রোজকার করবার জন্য কাজ খুজতে লাগলো।
ওর সোজা- সাপটা যুক্তি আমি চুরি বা ডাকাতি করছি না----?
বা কোন প্রকার সমাজ বিরোধী কাজও আমি কখনো করবো না। আমার শ্বশুর মশাই বা আমার স্বামীর সস্মান হানি হবে এমন কাজ আমি কোনোদিন ও করবো না।
সৎ ভাবে , সৎ পথে কাজ করতে ,
দোষ কোথায় ------?
অবশেষে ও ছোটো -ছোটো ছেলে-মেয়েদের টিউশন পড়তে শরু করলো----
প্রথমে একজন, দুজন হতে- হতে , ওর পড়ানোর আন্তরিকতা, দেখে অনেকগুলি ছোটো ছেলে মেয়ে ওর কাছে টিউশন পড়তে আসতে লাগলো।
আমার স্ত্রীর চোখে তখন আাগামীর সপ্ন -----
ও পেরেছে, ও পারবে, ওকে পারতেই হবে----
ওর স্বামীর জন্য, ওর সন্তানের জন্য,ওর সংসারের জন্য ------
ও থেমে ঠাকলো না, তাই সকাল - সন্ধ্যা টিউশনির পাশাপাশি, একটি ডাইরেক্ট সেল কোম্পানির বিউটি পোডাক্ট নিয়ে বাড়ি - বাড়ি গিয়ে সেল করতে লাগলো ----
দুই বেলা টিউশন আর ডোর টু ডোর বিউটি পোডাক্ট বিক্রি করে। মাসের শেষে বেশ কয়েক শত
টাকা ও রোজকার করতে লাগলো।
ওর এত পরিশ্রম করা দেখে আমার নিজেকে
খুব খারাপ লাকতো, আমার নিজেকে বড়ো
অপরাধী মনে হতো----
সে কখা আমার স্ত্রীকে বললেই ও আামাকে
বলতো চুপ করতো -----
সংসার তো আমাদের, আমাদের দুজনের,
সন্তান তো আমাদের দুজনের, তাই দুজনেই
রোজকার করবো-----
এতে তোমার আপওি বা তোমার অপরাধ আসবে কেন-----?
কত সহজ, কত সরল ভাবে আমার স্ত্রী অনু কথাগুলো বলে ফেলে-----
আসলে এমন কখা ওর পক্ষেই বলা সম্ভব,
কিন্তু আমি তো জানি , ও যদি আামাকে বিয়ে
না করে, অন্য কাউকে বিয়ে করতো ------
তা হলে ওকে আজ এতো কষ্ট, এত পরিশ্রম করতে হতো না।
ও জীবনে, অনেক, অনেক, অনেক -----
সুখী হতে পারতো, অনেক বেশি সুখে খাকতে পারতো ----
সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে
এই কখাটা সত্যি হয়েছে আামার জীবনে -----
ক্রমশ ------চলবে
এরপর পঞ্চম পর্বে
-------------------------------------------------------------------প্রিয় বন্ধুরা আমি আমার নিজের জীবন কাহিনী লিখছি ---, আমার ব্লগে--🖥️
*অর্ধেক জীবন* নামে, বেশ কয়েক টি পর্বে ,
আপনারা আমার সেই লেখা পড়তে চাইলে
লক অন করুন 👇
👉 https ://allsamir.blogpost.com
---------------------------------------------------------------
ভালো থাকবেন, সুস্হ খাকবেন----
আমার লেখা আপনাদের কেমন লাগেছে তা কমেন্ট করে বা
mondal1100mondal@gmail. Com
এটে মেল করে জানাবেন।
আপনাদের মূল্যবান মতামতের আশায়
রইলাম।
ইতি আপনাদের বন্ধু সমীর-----✍️
নমস্কার 🙏
Comments